দেশের ৩৩ শতাংশ গাড়ির ফিটনেস নেই, তবুও সনদ দিয়েছে বিআরটিএ

Samsuddin Chowdhury    |    ০৩:২০ পিএম, ২০২০-০৯-২৪


দেশের ৩৩ শতাংশ গাড়ির ফিটনেস নেই, তবুও সনদ দিয়েছে বিআরটিএ

সামসুদ্দীন চৌধুরী : চলতি বছরের জুলাই মাসে বিআরটিএর ঢাকা বিভাগে ১৯৪৪৩ টি প্রাইভেট ও ২৪০৭৬টি বাণিজ্যিক গাড়ির ফিটনেস দেয়। এর মধ্যে শুধু ঢাকা মেট্রো-১ সার্কেলে ফিটনেস দেওয়া হয় ১১২০৮ টি প্রাইভেট ও ১৪৬৭১ টি বাণিজ্যিক গাড়ির ।  সারাদেশে বিআরটিএর এই শাখাতে রয়েছে যানবাহন ফিটনেস টেস্টিং সেন্টার। তবুও কতিপয় অসাধু কর্মকর্তারা ফিটনেসের যোগ্য নয় এমন গাড়িকে না দেখে ফিটনেস দিয়ে থাকে। এমন এক ঘটনায় সাম্প্রতিক সময়ে এই সার্কেলের মোটরযান পরিদর্শক আনিসুর রহমানকে সাময়িক বহিস্কার করে কর্তৃপক্ষ। 

দেশের অন্য কোন বিআরটিএর সার্কেলে যানবাহন ফিটনেস টেস্টিং সেন্টার নেই। সেইসব সার্কেলের মোটরযান পরিদর্শকরা চোখে দেখে ফিটনেস দিয়ে থাকে। এদিকে গণপরিবহনের ফিটনেস যাচাইয়ের জন্য আগামী দুই মাসের মধ্যে যানবাহন ফিটনেস টেস্টিং (যাচাই) সেন্টার বাড়াতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। বিআরটিএ কর্তৃপক্ষকে এ নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে।

সড়ক দুর্ঘটনা রোধে যানবাহনের অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক ফিটনেস জরিপে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে ২০১৮ সালের ২৬ জুলাই হাইকোর্টে রিট করেন অ্যাডভোকেট তানভীর। রিটে স্বরাষ্ট্র সচিব, সড়ক পরিবহন ও সেতু সচিব, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ সড়ক নিরাপত্তা বিভাগের পরিচালক, বিআরটিএর ইনফোর্সমেন্ট বিভাগের পরিচালক ও পুলিশ মহাপরিদর্শককে বিবাদী করা হয়। 

একই বছরের ৩১ জুলাই এ রিটের প্রাথমিক শুনানিতে সড়ক দুর্ঘটনা রোধে ফিটেনেসবিহীন যান চলাচল বন্ধে বিবাদীদের কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না এবং ফিটনেসবিহীন যান চলাচল বন্ধে গণপরিবহনের ফিটনেস নিশ্চয়তা ও নজরদারিতে বিবাদীদের ব্যর্থতাকে কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়।

চলতি বছরের ২৩ সেপ্টেম্বর বুধবার এই রুলের শুনানিকালে বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের বেঞ্চ আগামী দুই মাসের মধ্যে যানবাহন ফিটনেস টেস্টিং (যাচাই) সেন্টার বাড়াতে বিআরটিএকে আদেশ দেন। আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট তানভীর আহমেদ।

অ্যাডভোকেট তানভীর জানান, দেশের সড়কে প্রায় ৪০ লাখ গাড়ি চলাচল করে। সড়কগুলোতে কী ধরনের গাড়ি চলছে, তা পর্যবেক্ষণে বাংলাদেশে ফিটনেস টেস্টিং সেন্টারের সংখ্যা অপ্রতুল। এ বিষয়টি আদালতে তুলে ধরেছি। আদালত সারাদেশে ফিটনেস টেস্টিং সেন্টার বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন। আগামী ২৩ নভেম্বর এ ব্যাপারে পরবর্তী আদেশের দিন ধার্য করা হয়েছে।
 
এই রুলের শুনানিকালে সড়ক দুর্ঘটনা এড়াতে সারাদেশের যানবাহনের ফিটনেসের বিষয়ে একটি সমীক্ষা চালাতেও সরকারকে কমপক্ষে ১৫ জন বিশেষজ্ঞ নিয়ে একটি জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ এবং আদালতে এর প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়।

হাইকোর্টের ওই আদেশের অধীনে গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটি একটি জরিপের প্রতিবেদন আদালতে জমা দিয়েছে। জরিপের প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে রিটকারী তানভীর আহমেদ বলেন, দেশের ৩৩ শতাংশ যানবাহনের ফিটনেস নেই, যদিও তাদের অনেকের ফিটনেস সার্টিফিকেট আছে। এ জন্য ফিটনেস যাচাই করতে আরও বেশি ফিটনেস টেস্টিং সেন্টার স্থাপনের আবেদন জানানো হয়। 

বিআরটিএর আইনজীবী মো. রফিউল ইসলাম হাইকোর্টকে বলেন, ইতোমধ্যে যানবাহনের ফিটনেস পরীক্ষার জন্য আরও ১২টি সেন্টার স্থাপনের জন্য বিআরটিএ দরপত্র দিয়েছে।